এস এম তানবীর
মাদারীপুর প্রতিনিধি
ইনভিশনঃ
দালালের প্রলোভনে পড়ে স্বপ্নের দেশ ইতালি পৌছাতে ৪৬ লাখ টাকা মুক্তিপন দিয়েও লিবিয়ায় দালালচক্রের বন্দিশালা থেকে মুক্তি পায়নি মাদারীপুরের যুবক সজিব।দেশে থাকা পরিবারকে ভিডিও কলে রেখেই লিবিয়ার বন্দিশালায় দালালচক্র অমানুষিক নির্যাতন চালাতো তার উপর। দালালচক্রের নির্যাতনে অবশেষে ইতালীর পরিবর্তে মৃত্যুপথের যাত্রীই হতে হলো সজিবকে। তার মত্যুর খবরে পরিবারে বইছে শোকের মাতম। লাশ দ্রুত দেশে আনা ও দালালচক্রের কঠোর বিচার দাবী করেছেন পরিবার।
প্যাকেজঃ
মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের চাঁনমিয়া সরদারের ছেলে সজিব সরদার পার্শবর্তী শিরখাড়া এলাকার দালাল বোরহান বেপারীর প্রলোভনে পড়ে স্বপ্নের দেশ ইতালী যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় পরিবারকে। পরে সজিবকে ১৫ লাখ টাকায় ইতালী পৌছে দেয়ার চুক্তি হয় দালাল বোরহানের সাথে। গত প্রায় ৪ মাস আগে বোরহান সজিব ও তার চাচাতো ভাই রাকিবকে সরাসরি ইতালী না নিয়ে লিবিয়া পাঠায়। লিবিয়া থেকে সজিব ও রাকিবকে সরাসরি ইতালি পাঠানোর কথা দেয় দালাল বোরহান। তবে লিবিয়া পৌছানোর পরই তাদের দুইজনকে ইতালি পাঠানোর কথা বলে আরেক দালাল চক্রের কাছে বিক্রি করে দেয়। ওই দালালচক্র আরেক দফা বিক্রি করে সজিব ও রাকিবসহ আরো বাংলাদেশী যুবকদের। তারা আটকে যায় কথিত মাফিয়া চক্রের বন্দিশালায়। সেখানে সজিবের উপর করা হতো অমানুষিক নির্যাতন। পরিবারকে ভিডিও কলে রেখে নির্যাতনের দৃশ্য দেখিয়ে দালালচক্র ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। অসহায় পরিবার ছেলের মুক্তির আশায় জমিজমা বিক্রি করে ও মানুষের কাছ থেকে ঋন করে পূরন করে দালালচক্রের চাহিদা।এরপরও সজিবকে মুক্তি না দিয়ে দফায় দফায় নির্যাতন করে আরো মুক্তিপন দাবী করে দালালচক্র। আবারো পরিবার ৬ লাখ টাকা তুলে দেয় দালালচক্রের হাতে। তবুও মুক্তি না দিয়ে আরো টাকা দাবী করে দালালচক্র। আর অন্যদিকে চলে অমানুষিক নির্যাতন। দালালদের নির্যাতনে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে সজিব। এক পর্যায়ে সজিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরলে গত বুধবার সজিবকে লিবিয়ার একটি রাস্তার পাশে ফেলে রেখে দেয় দালালচক্র। সেখান থেকে অনেক কষ্টে সজিব পরিবারকে ফোন করে।পরে পরিবারের সদস্যরা লিবিয়ায় বসবাসকারী এক পরিচিত জনকে ফোনে সহযোগিতা চায়। পরে সেই ব্যক্তি সজিবকে উদ্ধার করে লিবিয়ার একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে সজিবের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার সজিবের মৃত্যুর খবর এলে পরিবারজুড়ে শুরু হয় শোকের মাতম। প্রিয়জনকে হারিয়ে পাগলপ্রায় স্বজনরা। সজিবের লাশ দ্রুত দেশে আনা ও দালাল বোরহানের বিচার দাবী করেন স্বজনরা।